শুক্রবার, অক্টোবর ১১, ২০২৪
Google search engine
Homeশীর্ষ সংবাদশান্তিগঞ্জে মানহানি ও মিথ্যাচারের অভিযোগ অধ্যক্ষের

শান্তিগঞ্জে মানহানি ও মিথ্যাচারের অভিযোগ অধ্যক্ষের

শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি:

শান্তিগঞ্জ উপজেলার মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ আক্তাপাড়া ফাজিল মাদ্রাসা। প্রায় ৪০ বছর ধরে উপজেলাব্যাপী দ্বীন ইসলামের প্রোজ্জ্বল আলো বিলিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। মাদ্রারাসার বর্তমান অধ্যক্ষ মাওলানা মইনুল হক ১৯৯৫ সাল থেকে কর্মরত আছেন প্রতিষ্ঠানটিতে। এই মাদ্রাসাটিকে দাখিল থেকে ফাজিল পর্যন্ত নিয়ে আসতে অনেক পরিশ্রম করেছেন তিনি। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও নানান অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন সদ্য বাতিল হওয়া পরিচালনা কমিটির এক সদস্য। অভিযোগকারীর নাম মো. জালাল মাহমুদ। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুকান্ত সাহা। তদন্ত চলমান রয়েছে।

এমন পরিপ্রক্ষিতে মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুন্ন করা ও ব্যক্তিগত মানহানি এবং তার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণভাবে মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন আক্তাপাড়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও. মইনুল হক। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে তিনি বলেন, প্রায় ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার যে অভিযোগ জালাল মাহমুদ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাদের প্রতিষ্ঠানের সকল হিসাব স্বচ্ছ আছে। আমার যোগদানের পর থেকে অনেক কমিটি এসেছে কিংবা এখনো অনেকে আছেন কারো কোনো অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে ছিলোই না। মো. জালাল মাহমুদ তার ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে না পেরে একটি মিথ্যা অভিযোগ এনে আমার মানহানি করার চেষ্টা করছেন। সপরিবারে মাদ্রাসা হোস্টেলে থাকার বিষয়ে তিনি যে অভিযোগ করেছেন সেটাও ঠিক না। আমরা মোট ৬জন শিক্ষক মাদ্রাসায় আবাসিক থাকি। অভিযোগ শুধু আমার উপর। অথচ আমি কমিটি নিয়ে সভা করে, রেজুলেশনের মাধ্যমে ভাড়ায় সেখানে থাকছি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত একটি টাকাও নেওয়া হচ্ছে না বা হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে আমরা রশিদ দিচ্ছি না ঠিক, কিন্তু টাকা উত্তোলনের বিষয়গুলো শ্রেণি শিক্ষকরা অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে হাজিরা খাতা, বেতন ও জরিমানা রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। এসবের তদারকিতে আছেন সহকারি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান। যে কেউ চাইলে সেই হিসাব দেখতে পারবেন। অভিযোগপত্রে জালাল মাহমুদ বলেছেন, ‘মাদ্রাসার অনুদানের সঠিক হিসাব নাই।’ তার এই অভিযোগও মিথ্যা। এযাবৎকালে আমাদের কাছে যে যত টাকা অনুদান দিয়েছেন তার সব রশিদ আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। দাতাদের ফোনেও পাঠানো হয়েছে। এখানে অর্থের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। আমার স্ত্রীর নিয়োগের ব্যপারে অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি নাকি ক্লাস করেন না। তার নিয়োগ সম্পূর্ণ বৈধ। এটি নারী কোটা ছিলো। নিয়ম মেনে যোগ্যতার ভিত্তিতেই তিনি নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। তার নিয়োগের উপর দুইবার মিনিস্ট্রি অডিট হয়েছে। আর আমাদের নির্দিষ্ট ক্লাস রুটিন আছে। রুটিন অনুযায়ী তিনি ক্লাস করেন। অন্যান্য সহকারি শিক্ষকরা তার প্রমাণ। শিক্ষার্থী মারধর বা অভিযোগকারীকে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। অধ্যক্ষ মইনুল হক বলেন, কয়েক বছর পূর্বে জালাল মাহমুদ ও তার ভাই জামিল মিলে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সাথে অশালীন আচরণ করেছিলেন। এলাকায় তখন শালিস হয়েছিলো। শালিসে তারা ক্ষমাপ্রার্থী হয়ে মাদ্রাসার একটি খাতায় ‘বন্ডসই’ বা অঙ্গিকার দিয়েছিলেন যে, ভবিষ্যতে এমন কাজ করবেন না। সেই আক্রোশ থেকে মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুন্ন করতে উঠেপড়ে লেগেছেন তিনি।

অভিযোগকারী মো. জালাল মাহমুদ বলেন, কমিটিতে অনেক মানুষ আছেন, সবার চোখের সামনেই অধ্যক্ষ মইনুল হক দুর্নীতি করছেন, কেউ কোনো কথা বলেন না। প্রথম থেকে আমিই কথা বলে আসছি। আমার চোখে এসব দুর্নীতি ধরা পড়ায় ও আমি কথা বলায় অধ্যক্ষের লোক এওর মিয়াসহ আরও অনেকে আমাকে মারধর পর্যন্ত করেছে। আমার বাড়িতে হামলার প্রস্তুতিও নিয়েছিলো তারা। আমি কোনো কথা বললেই তারা আমার কথায় কান না দিয়ে সব প্রশ্ন এড়িয়ে চলতেন। অনেক মিটিংয়ে তারা আমাকে দাওয়াত দিতেন না। শুধু আমি না, আরো দু’জন সদস্য আছেন তারাও নিয়মিত দাওয়াত পেতেন না। আমি ইউএনও স্যার বরাবরে যে অভিযোগ করেছি আশা করি স্যারের কাছ থেকে ন্যায় বিচার পাবো।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বলেন, মাদ্রাসা বিষয়ে ডিসি অফিসের মাধ্যমে একটি অভিযোগ পেয়েছি। এর তদন্ত এখনো চলমান। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রাসঙ্গিক সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

জনপ্রিয়

Recent Comments