মাঈন উদ্দিন, শাবিপ্রবি:
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (২০২৪-২৫) স্নাতক ১ম বর্ষ ১ম সেমিস্টারের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন থেকে শুরু করে ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গিয়েছে । তবে এসব অসংগতি নিয়ে অবগত নয় বলে গণমাধ্যমে মন্তব্য করেন ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. বদিউজ্জামান ফারুক।
ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলের এসব অসংগতির বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমে তিনি- ‘এ বিষয়ে আমি খুব একটা জড়িত নই। এসব বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষার সদস্য সচিব ভালো বলতে পারবে’ বলে মন্তব্য করেন।
গত ৫ জানুয়ারি ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু হলেও ৫ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত বিভিন্ন সমস্যার কারনে শাবিপ্রবির ওয়েবসাইটেই প্রবেশ করতে পারে নি বলে অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের। তাই নির্দিষ্ট সময়ে ভর্তি আবেদন সম্পন্ন করতে না পাড়ায় পরবর্তীতে আবেদনের মেয়াদ বৃদ্ধি করে শাবিপ্রবি প্রশাসন। ভর্তি আবেদন সম্পন্ন হবার পর এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলসহ ভুল তথ্য প্রদর্শন হয় শাবিপ্রবির ওয়েবসাইটে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পরেন। এমনকি ফলাফল প্রকাশের দিন ও শাবিপ্রবির ওয়েবসাইটে ভুল তথ্য প্রদর্শনের অভিযোগ পাওয়া যায়। এতে ভর্তি পরীক্ষায় প্রকৃত নম্বর পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
গতকাল রবিবার (৯ মার্চ) ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এই ফলাফল প্রস্তুত ও প্রকাশিত ফলেও অসঙ্গতি দেখা গেছে বলে অভিযোগ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের।
প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, একেকজনের ফলাফল কয়েকবার করে প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি এক পেজের পিডিএফে ১১ জনের ফলাফলে সমস্যা লক্ষ্য করা গিয়েছে। কারও ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল তিনবারও এসেছে। এসব ফলাফলে চরম অসঙ্গতি রয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। প্রায় দশের অধিক পৃষ্ঠায় এমন অসংগতি লক্ষ্য করা গেছে
ফলাফল প্রস্তুতে অসঙ্গতি প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ বোর্ডের মাহবুবা নামের এক ভর্তিচ্ছু জানান, আমি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শাবিপ্রবির ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। কিন্তু আবেদনের পর আমার অ্যাকাডেমিক বিভিন্ন তথ্য ভুলভাবে প্রদর্শিত হয়েছে ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে।
‘‘আমার মাধ্যমিকের প্রকৃত জিপিএ-৪.৮৯। অথচ ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে জিপিএ দেখাচ্ছে জিপিএ-৩.৭৫। একইসাথে আমার মাধ্যমিকের বোর্ড ময়মনসিংহ। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে দেখাচ্ছে মাদ্রাসা বোর্ড।’’
ফলাফল প্রকাশের দিনও তিনি বলেন, আবেদনের পর থেকে আজ সকাল বেলা পর্যন্ত ওয়েবসাইট চেক করলে এমন ভুল তথ্য প্রদর্শন করেছিল। এমনকি দুপুর দিকে ওয়েবসাইট ডাউন দেখাচ্ছিল। বারবার চেক করার চেষ্টা করলে ওয়েবসাইটে তথ্য প্রদর্শিত না হয়ে প্রোগ্রামিং কোড প্রদর্শন করছিল। আমি আশংকা করছি আমার মূল ফলাফলেও নাম্বার কম আসতে পারে।
হেল্পলাইনে কল দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি রেজাল্ট ও বোর্ডের সমস্যা নিয়ে ভর্তি পরীক্ষার আগে ও পরে ওয়েবসাইটের হটলাইনে বেশ কয়েকবার কল দিলেও কর্তৃপক্ষের সাড়া পাইনি।
তিনি আরও বলেন, যদি হটলাইনে সহযোগিতাই নাই পেয়ে থাকি, তাহলে হটলাইন কেন দেওয়া হলো বুঝি না।
এদিকে, ভর্তি পরীক্ষার প্রাপ্ত নাম্বার ৮০ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক জিপিএর উপর ২০ নাম্বার গণনা করা হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে পরীক্ষার্থীর জিপিএ ভুল দেখায়, তাহলে নিয়মানুযায়ী জিপিএর উপরও বরাদ্দকৃত ২০ নম্বরের মধ্যে পরীক্ষার্থীরা যথাযথ নাম্বার পাওয়ার থেকে বঞ্চিত হবে বলে অভিযোগ করেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। সে ফলাফল ঠিক হয়েছে কিনা বা হবে কিনা সেটাও আমরা জানতে পারছি না।
এ বিষয়ে ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলামকে একাধিক দিন একাধিক বার ফোন দিয়েও পাওয়া যায় নি।
এছাড়াও এ বিষয়ে জানতে ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. বদিউজ্জামান ফারুককেও একাধিকবার কল দিলে তাকেও ফোনে পাওয়া যায় নি।