বুধবার, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫
Google search engine
Homeজাতীয়ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করলেন টিউলিপ

ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করলেন টিউলিপ

আধুনিক কাগজ ::

সমালোচনার মুখে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের (ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার) পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ নিজেই এক্সে এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন। টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) ছিলেন। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে।

গত আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। এরপর শেখ হাসিনা সরকার আমলে বাংলাদেশে ৯টি অবকাঠামো প্রকল্প থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। তাতে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম আসে। ওই অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের এ তৎপরতা আলোচনায় আসার পর যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়। ২০১৩ সালে শেখ হাসিনার মস্কো সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের সময় টিউলিপ সিদ্দিকও উপস্থিত ছিলেন। তাঁর ওই ছবি এ সময় ফলাও করে প্রচার করে বেশ কয়েকটি ব্রিটিশ গণমাধ্যম।

টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান একজন বিরোধীদলীয় পার্লামেন্ট সদস্য। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিয়মিত খবর, সম্পাদকীয় প্রকাশিত হতে থাকে। এর মধ্যে শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনের সম্পত্তি টিউলিপের ব্যবহার করা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে টিউলিপ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের অনুরোধ জানিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা (ইনডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অন মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) লাউরি ম্যাগনাসের কাছে চিঠি (রেফারেল) লিখেছিলেন। মন্ত্রীদের আচার-আচরণ, নীতিনৈতিকতা বিষয়ে ম্যাগনাস যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীকে উপদেশ দিয়ে থাকেন। ওই তদন্ত চলার মধ্যেই পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক।

এদিকে যুক্তরাজ্য সরকারের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের এ চিঠি গ্রহণ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। টিউলিপের এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় তাঁকে একটি চিঠিও লিখেছেন তিনি। টিউলিপকে লেখা ওই চিঠিতে কিয়ার স্টারমার লিখেছেন, তিনি দুঃখের সঙ্গে টিউলিপের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) হিসেবে যে ভূমিকা রেখেছেন, সে জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। তিনি টিউলিপকে উদ্দেশ্য করে লিখা ওই চিঠিতে বলেন, আপনার জন্য দরজা খোলা রইল।

নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য লাউরি ম্যাগনাসের প্রতি আহ্বান জানানোয় টিউলিপ সিদ্দিককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কিয়ার স্টারমার। বলেছেন, আমি স্পষ্ট করছি যে একজন স্বাধীন উপদেষ্টা (ইনডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অন মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) হিসেবে লাউরি ম্যাগনাস আমাকে নিশ্চিত করেছেন যে তিনি আপনার দিক থেকে মন্ত্রিত্বের বিধির (মিনিস্ট্রিয়াল কোড) কোনো লঙ্ঘন পাননি এবং কোনো আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাননি।’

টিউলিপ সিদ্দিক গত বছর লেবার পার্টির মনোনয়নে লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে টানা চতুর্থবারের মতো যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর গত জুলাইয়ে তাঁকে ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার পদে নিয়োগ দেয় প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার নেতৃত্বাধীন সরকার। তিনি ২০১৫ সালে প্রথম যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

প্রাসঙ্গিক সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

জনপ্রিয়

Recent Comments