বুধবার, জানুয়ারি ২২, ২০২৫
Google search engine
Homeশিক্ষানবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিল শাবিপ্রবি

নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিল শাবিপ্রবি

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি:

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তার ৩২০ একরের ভুমিতে বরণ করে নিল স্নাতক ১ম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের।

রবিবার (৩ নভেম্বর ) দুই ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এ নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজা সেলিমের সভাপতিত্বে এবং সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. তাহমিনা ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন।

সকালে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ‘বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের এবং দুপুর আড়াইটায় সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসা শিক্ষা প্রশাসন অনুষদের শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয় বিশ্ববিদ্যালয়টি।

ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অর্জন ও কার্যক্রম নবীন শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরা হয়। নবীন শিক্ষার্থীরা যেন সকল ধরনের হয়রানি মুক্ত থাকতে পারে সেজন্য প্রক্টরিয়াল নীতিমালা ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ সেল সম্পর্কেও ধারণা দেওয়া হয়।

নবীন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘দেশসেরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে তোমরা ভর্তি হতে পেরেছ এটা গৌরবের। এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, পড়ালেখা ও গবেষণার পাশাপাশি শরীরচর্চা করতে হবে। কখনো নেশাগ্রস্ত হওয়া যাবে না। এমনকি সিগারেট না খেতেও নির্দেশনা দেন শিক্ষার্থীদের।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম নবীনদের উদ্দেশ্য দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য দেন।

জুলাই বিপ্লবে নিহত শিক্ষার্থীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘টিলাবেষ্টিত সবুজ ক্যাম্পাসে তোমাদের পদচারণা মঙ্গল হোক। বিশ্ববিদ্যালয় হলো মুক্ত জ্ঞানচর্চার জায়গা। সেই মুক্ত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। একটি আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে যেরকম মানুষ দরকার আমরা সে রকম মানুষ তৈরি করতে চাই।

সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক ড রেজা সেলিম নবীনদের উদ্দেশ্য বলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে নিজেদের দূরে রাখার চেষ্টা করবে। কেননা এটা নেশার মত। আর তোমরা অবগত আছো যে কোন কিছুর নেশা মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়।

নিজের অনূভুতি ব্যক্ত করে সদ্য ভর্তি হওয়া কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী রেদওয়ানুল হক মারুফ বলেন, ‘মা বাবার দোয়া আর নিজের প্রচেষ্টায় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় বিজ্ঞান ইউনিটে প্রথম হই। পছন্দের শীর্ষে আর দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরেছি। এখন শাবির অগ্রগতির অংশীদার হতে চাই।

ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শেখ নাজিয়া রহমান বলেন, ‘সিলেটের স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় ছোট থেকেই শাবি আমার কাছে একটি আবেগী নাম। নিজের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরে আমি গর্বিত। এ সফলতার পেছনে যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি আমার শিক্ষক ও মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন দক্ষতার পাশাপাশি বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে যাবে সেই প্রত্যাশা করছি’।

নবীন বরন অনুষ্ঠান পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের অনুভূতি জানতে চাইলে সমাজ-কর্ম বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী সাগর মজুমদার বলেন, স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে পেরে খুবই ভালো লাগতেছে। নৃবিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী অতই বলেন, ৩২০ একরের শিক্ষার্থী হতে পেরে আমি আমার মা বাবার মুখে হাসি ফোটাতে ফেরেছি যা আমার জন্য সর্বোচ্চ সাফল্যের। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একটি র‍্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস চাই যেখানে আমরা নবীন শিক্ষার্থীরা কোন ধরনের শারীরিক, মানসিক হেনস্তার শিকার না হয়ে আমাদের মেধার বিকাশ ঘটিয়ে আমাদের নিজেদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়কে অনন্য মাত্রায় নিয়ে যাব।

পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী জাকির আহমেদ বলেন যদিও আমি আমার কাংক্ষিত বিষয় পাইনি এজন্য একটু মন খারাপ ছিল, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর এর সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছি।

এদিকে দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা নবীন শিক্ষার্থীদের আগমনে ক্যাম্পাস সেজেছে নতুন আঙ্গিকে। গোলচত্তর থেকে কেন্দ্রীয় মিলনায়তন পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে শোভা পাচ্ছে নানা রঙের পতাকা। এদিন সকাল থেকেই নবীন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের মা-বাবাকে আসতে দেখা যায়। আয়োজক কমিটির সদস্যরাও শিক্ষার্থীদের সাথে অবিভাবকদের অনুষ্ঠান উপভোগের সুযোগ করে দেওয়ায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তারা। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়ে ধন্যবাদ জানান অভিভাবকরা।

প্রাসঙ্গিক সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

জনপ্রিয়

Recent Comments