বালাগঞ্জ প্রতিনিধি:
বালাগঞ্জের মাদ্রাসাবাজার নামীয় পশুর হাটটি এখন স্থানীয় জনসাধারণের জন্য এক বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলার দেওয়ানবাজার ইউনিয়নে অবস্থিত এ পশুর হাটটিতে পশু বিক্রেতাগণ মূলসড়কের দুইপাশে গরু/ছাগল বেধে রাখায় স্থানীয় জনসাধারণের যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির দিনে রাস্তার দুইপাশে গরু/ছাগল বেধে রাখা। গরু/ছাগলের মলমূত্র বৃষ্টির পানিতে একাকার হয়ে বাজারের পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। এতে হাটাচলা করতেও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে পথচারীদের।
এদিকে, বাজারের ভেতরের দুইপাশে রাস্তায় পশুর হাট বসায় মোরারবাজার থেকে মাদ্রাসাবাজার এবং দয়ামীর থেকে মাদ্রাসাবাজার রাস্তায় গাড়ির জ্যাম যেন নিত্তনৈমত্তিক ব্যাপার।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাজার বারে দূর-দূরান্ত থেকে গরু নিয়ে আসা গাড়ি গুলো যত্রতত্র পার্কিং করাই জ্যামের মূল কারণ।
এছাড়া রাস্তার দুইপাশে হাট বসায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরও যাতায়াতে সমস্যা হয়। কাদা আর গরুর মলমূত্রের উপর দিয়েই হেটে যেতে হয় পথচারীদের।
স্থানীয়রা জানান, সরকারিভাবে বাজারটি মূলত যে জায়গায় ইজারা দেওয়া হয়েছে সে জায়গাতে পশুর হাট না বসিয়ে অন্যত্র জায়গায় হাট বসিয়েছেন ইজারাদারগণ।
আগেও যারা বাজারটি ইজারা নিয়েছিলেন তারাও একই কায়দায় বাজার পরিচালনা করেছেন।
মাদ্রাসাবাজারের ইজারার তথ্য সম্বলিত একটি কাগজ ঘেটে দেখা যায়, স্থানীয় আমপাড়া, সিরাজপুর গ্রামের জনৈক মোহাম্মদ রাসেল মিয়া নামের একজন লোক বাজারটি ইজারা নিয়েছেন। ১৪৩১ বাংলা সনের ১লা বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত মেয়াদে তিনি বাজারটি ইজারা নিয়েছেন।
ইজারার কাগজে পশুর হাটের জন্য নির্ধারিত জায়গার বাইরে গিয়ে অন্য জায়গায় বসানো হয়েছে পশুর হাট। ইজারা হস্তান্তরের দিনে একটি বক্তৃতায় তা স্বীকারও করেছেন সুলতানপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র রায়। তার বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
এদিকে, ইজারাদারগণ প্রভাবশালী হওয়ায় মুখ খুলতে পারছেন না স্থানীয় জনসাধারণ। তবে, ভেতরে ভেতরে কানা-ঘুষা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। তাদের দাবি, নির্ধারিত স্থানেই যাতে হাট বসে এবং বাজারের পরিবেশ যাতে বিনষ্ট না হয়।
এ ব্যাপারে বাজারের ইজারাদার মোহাম্মদ রাসেল মিয়া বলেন, আমরা বাৎসরিক চুক্তিতে ইজারা নিয়ে হাট পরিচালনা করছি। বিগতদিনে বাজার অপরিচ্ছন্ন থাকলেও এখন আমরা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা করেছি।
তবে, সরকারি অর্থায়নে বাজার উন্নয়নের কাজ চলমান থাকায় বৃষ্টির কারণে স্তূপ করে রাখা মাটি গলে কাদায় পরিণত হয়েছে। সে জন্য তো আমাদের উপর কারো দায় চাপানো ঠিক হবে না।
বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারিয়া হক বলেন, রাস্তার পাশে পশুর হাট বসা অত্যন্ত দুঃখজনক। এতে পথচারীদের হাটাচলায় সমস্যা হবে। রাস্তার পাশে যাতে গরুর হাট না বসে এ বিষয়টি আমি গুরুত্বসহকারে দেখবো।
বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান আনহার মিয়া বলেন, বিষয়টি আপনার কাছ থেকে জানলাম। আপনারা জানেন আমি এখনো চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করিনি। তারপরও আমি বিষয়টি দেখবো।