আধুনিক ডেস্ক ::
রাজধানীর শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়নি। জামিন চাইতে তিনি আইনজীবীর ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেননি।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের সামনে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রিজন ভ্যানে আনা হয় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন ও সাংবাদিক মনজুরুল আলম পান্নাকে। ভ্যানটি হাজতখানার দিকে যায়। দেড় ঘণ্টা পর তারা হাজতখানা থেকে বের হন। লতিফ সিদ্দিকীর মাথায় পুলিশের হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। তার দুই হাত পেছনে ছিল। তবে হাতকড়া পরানো ছিল না। লতিফ সিদ্দিকীর পেছনে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান। তাঁর বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, মাথায় পুলিশের হেলমেট। ডান হাতে হাতকড়া, বাঁ হাতে বাংলাদেশ সংবিধান। এ সময় হাফিজুর রহমান সংবিধান বাঁ হাত ধরে উঁচু করে ধরে রাখেন। পরে তাদের নেওয়া হয় আসামির কাঠগড়ায়।
একজন আইনজীবী কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর কাছে এগিয়ে যান। তিনি ওকালতনামায় স্বাক্ষর নিতে চান। আবদুল লতিফ সিদ্দিকী আইনজীবীকে বলেন, আদালতের প্রতি তাঁর কোনো আস্থা নেই। এ জন্য তিনি কোনো আইনজীবী নিয়োগ দেবেন না। তখন সেই আইনজীবী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর কাছে জানতে চান, তিনি নিজে আদালতে কোনো কথা বলতে চান কি না? তখনো আবদুল লতিফ সিদ্দিকী সেই আইনজীবীকে জানিয়ে দেন, তিনি আদালতের কাছেও কোনো বক্তব্য দেবেন না।
অন্য আসামিদের পক্ষে জামিন আবেদন করা হয় বলে জানান আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া অন্য আসামিরা হলেন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন), মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, মঞ্জুরুল আলম, কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল, গোলাম মোস্তফা, মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু, মো. জাকির হোসেন, মো. তৌসিফুল বারী খান, মো. আমির হোসেন সুমন, মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শাহেদ হাসান, মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দেওয়ান মোহাম্মদ আলী ও মো. আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম।
এদিন সকালে তাদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক তৌফিক হাসান। আসামিপক্ষে আইনজীবী জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে ‘মঞ্চ ৭১’। এটিকে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের প্ল্যাটফর্ম বলে অভিযোগ করে আসছে জুলাই অভ্যুত্থানের আন্দোলনকারীরা।
অনুষ্ঠানটির আমন্ত্রণপত্রে অতিথি হিসেবে নাম ছিল গণফোরামের সাবেক সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও আইনজীবী জেড আই খান পান্নার। এ অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী এলে তাকে একদল লোক ঘিরে ফেলে এবং আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদের নিয়ে যায়। পরে বিকেলে তাদের শাহবাগ থানা থেকে ডিবিতে নেওয়া হয়।
রাতে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করে।


