বুধবার, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫
Google search engine
Homeমৌলভীবাজারসড়কের ধারে অর্ধশতাধিক সেগুন গাছ বিক্রি, রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

সড়কের ধারে অর্ধশতাধিক সেগুন গাছ বিক্রি, রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

স্থানীয় বন কর্মকর্তার সমঝোতার অভিযোগ

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:

কোন ধরনের টেন্ডার ও পারমিট ছাড়াই সড়কের পাশ থেকে ৫২টি সেগুন গাছ কেটে বিক্রি করা হয়েছে। স্থানীয় বন কর্মকর্তার সমঝোতার ভিত্তিতে গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার। পরিবেশেরও ক্ষতি হয়েছে। সম্প্রতি কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের সনজরপুর-নিশ্চিন্তপুর সড়কের পাশ থেকে কমলগঞ্জের এক ব্যবসায়ী মূল্যবান সেগুন গাছ কেটে নিয়ে যান।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর সনজরপুর-নিশ্চিন্তপুর সড়কের একপাশে সারিবদ্ধ থাকা ৫২টি সেগুন গাছ কেটে নেয়া হয়েছে। কালের সাক্ষী হিসাবে গাছের গুড়া পরিত্যক্ত রয়েছে। মাঝারি সাইজের সারিবদ্ধ গাছগুলো রাস্তায় মানানসই থাকলেও এখন সবগুলো গাছ বিলীন হয়ে গেছে।

গাছগুলোর বয়স ১৫ থেকে ২০ বছরের। বন বিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জ অফিসের এক রেঞ্জ কর্মকর্তার সাথে সমঝোতা করে কমলগঞ্জের মিলন মিয়া নামে এক কাঠ ব্যবসায়ী ও স’মিল মালিক গাছগুলো কিনে কেটে নিয়েছেন। কেটে নেওয়া গাছের বাজার মূল্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা হবে। এতে রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার এবং পরিবেশেরও অপুরনীয় ক্ষতি হয়েছে। তবে গাছ কাটার বিষয়ে এলজিইডি কিছুই জানে না। বন বিভাগও তাদের আয়ত্তের বাইরে এবং ব্যক্তি মালিকানার গাছ বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে।

স্থানীয়রা জানান, গাছ কাটার সময়ে বন বিভাগের লোকজনও এখানে এসে গাছ কাটা বন্ধ করে যান। কয়েকদিন পর আবার গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শাহীন আহমেদ নামের এক ব্যক্তি জানান, কুলাউড়া রেঞ্জ অফিসের ফরেস্ট গার্ড আমিনুল ইসলামের মাধ্যমে এক লক্ষ টাকার রফাদফায় রেঞ্জ কর্মকর্তার সমঝোতায় গাছ বিক্রি করা হয়েছে।

গাছের মালিকানা দাবিদার মনোহরপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা খালিক মিয়া বলেন, আমার জমির উপর লাগানো সেগুন গাছ আমি এক লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছি। সড়ক আমার জমি কেটে নিয়েছে। কমলগঞ্জের এক ব্যক্তির কাছে গাছ বিক্রি করেছি। সে বন বিভাগের অনুমতি নিয়েছে, না কিভাবে গাছ কেটে নিয়েছে সেটি আমার দেখার বিষয় নয়।

এব্যাপারে জানতে চাইলে কমলগঞ্জের মিলন মিয়া মোবাইল ফোনে গাছ কিনার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন সেগুন গাছ কিনি নাই এবং মনোহরপুর গ্রামও চিনি না।

এলজিইডি কুলাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম বলেন, গাছ কেটে নেয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না। শরীফপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. লাল মিয়া বলেন, সড়কের পাশ থেকে গাছ কাটার বিষয়ে বন বিভাগের লোকজনও সেখানে আসতে শুনেছি। তবে পরে কি হয়েছে আমার জানা নেই।
৫২টি সেগুন গাছ কেটে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট বন বিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ মোবাইল ফোনে ইত্তেফাককে বলেন, ‘আমার এখান থেকে মনোহরপুর ২৮ কি.মি. দূর। এগুলো বাড়ির গাছ। জমি আমাদের নয়, গাছও আমাদের নয়। সেখানে গেলে লোকজন মারবে।’

এ ব্যাপারে সিলেট বনবিভাগের শ্রীমঙ্গলস্থ সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ নাজমুল আলম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বাড়ির গাছ কাটতে হলেও বন বিভাগের অনুমতি নিতে হয়। আর সড়কের পাশ থেকে সেগুন গাছ কাটার বিষয়ে অবশ্যই অনুমতি লাগবে। বন বিভাগের কেউ এর দায় এড়াতে পারেন না। আমি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিচ্ছি।

প্রাসঙ্গিক সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

জনপ্রিয়

Recent Comments