এমকে তুহিন:
‘আমার বড় আদরের ছেলে, সবার ছোট ছিল সে। সে যেই সেই ইঞ্জিনিয়ার ছিলনা। তিনজনের কাজ একাই করতো সে।’ কথাগুলো বলছিলেন ৪ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বুলেটের আঘাতে নিহত মিনহাজের বাবা আলাই মিয়া।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রায় দেড় ঘণ্টা তার প্রাণ ছিল। তিনি বলেন, আমরা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সিলেট নর্থইষ্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারা বলেন সে জীবত আছে। তারা তাকে ব্যান্ডেজ করে দ্রুত ওসমানি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। আমরা যখন সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাই তখনও সে জীবিত ছিল। চিকিৎসার জন্য তাকে ৩ তলায় আইসিইউ তে পাঠানো হলে কিছুক্ষণ পর খবর আসে সে মারা গেছে।
সাঈদ আহমদ বলেন, আমার ভাইয়ের লাশ নিয়েও আমাদেরকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। প্রথমদিন নানান অজুহাতে আমাদের লাশ দেওয়া হয়নি। সারাদিন অনেক দৌড়াদৌড়ি, এখানে সেখানে যাওয়া-আসার পর পরের দিন রাতে ফোন আসে লাশ দেওয়া হবে। আমাদের বলা হয়েছিল থানা থেকে ক্লিয়ারেন্স আনার জন্য কিন্তু থানা ঘেরাও থাকায় আমরা থানায় ঢুকতেই পারিনি। কোতোয়ালি থানায়ও ছিলনা পুলিশ। এককথায় দুইটা দিন লাশের জন্য আমাদেরকে খুব বেশি হয়রানি করেছে। তিনি বলেন, যখন আমার ভাইকে গুলি করা হয় তখন পুলিশ ও বিজিবির সাথে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতারাও।
মিনহাজের বাবা ছেলের স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমার বড় আদরের ছেলে, সবার ছোট ছেলে সে। আমার এই দুই ছেলে আমার পরিবারের দেখাশোনা করতো। আমার ছেলে যেই সেই ইঞ্জিনিয়ার ছিলনা।
তিনি বলেন, আমার ছেলেকে আল্লাহ নিয়ে গেছেন কেউ তো আর ফিরিয়ে দিতে পারবেনা কিন্তু এই জালিম সরকার যেন আর না আসে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
উল্লেখ্য, ৪ আগষ্ট বেলা তিনটার দিকে গোলাপগঞ্জ চৌমহনা এলাকায় বিক্ষোভকারীরা জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে গোলাপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা সেখানে আসেন। পরে পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় গোলাপগঞ্জ থানার দিক থেকে আসা একটু বুলেট মিনহাজের পেট ছিদ্র করে বের হয়ে যায়।