কাওছার আহমেদ রাহাত, গোয়াইনঘাট:
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৪ (জৈন্তা, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ মনোনীত প্রার্থী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এর নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে লড়ছেন দুইজন প্রার্থী। তারা হলেন- তৃনমূল বিএনপির আবুল হোসেন (সোনালী আঁশ প্রতীক) ও ইসলামী ঐক্যজোটের নজিম উদ্দিন কামরান (মিনার প্রতীক)।
গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু হলেও ইমরান আহমদের আওয়ামিলীগ দলীয় নেতাকর্মী ছাড়া এই আসনের আওতাধীন গোয়াইনঘাট উপজেলায় এখন পর্যন্ত অন্য দুই প্রার্থী বা তাদের নেতাকর্মীদের মাঠে তেমন একটা দেখা যায়নি।
এমনকি এসব প্রার্থীদের পোস্টার বা ব্যানার ও তেমন একটা চোখে পড়েনি। অনেকটা ফাঁকা মাঠে প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও দলীয় নেতাকর্মীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে নৌকার জন্য ভোট চাইছেন। প্রতিদিনই উঠান বৈঠক, মিছিল, সভা-সমাবেশ করছেন। উপজেলার রাস্তাঘাট, হাটবাজারে একক নৌকা মার্কার পোস্টারে ছেয়ে গেছে। প্রতিদিন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আনন্দমুখর পরিবেশে গণসংযোগ ও সভা সমাবেশ করছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের দুই প্রার্থী বা তাদের কোনো কর্মী-সমর্থককে গণসংযোগ করতে দেখা যাচ্ছে না। ইমরান আহমদ এর পক্ষে ভোটের মাঠে লড়াইয়ের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। উপজেলার প্রত্যেক ওয়ার্ডভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনার জন্য কমিটি গঠনও করা হয়েছে। উপজেলার মূল কমিটির পাশাপাশি নির্বাচনে প্রচারণার জন্যও আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উপজেলার একাধিক ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের বাইরে এই আসনে শক্ত অবস্থান রয়েছে বিএনপির। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হওয়ার মোটেও সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন ভোটাররা। ভোটারদের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ কম থাকায় তাঁদের কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াও কঠিন হবে বলেও অভিমত অনেক ভোটারের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামিলীগ এর এক নেতা বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে যারা নির্বাচন করছেন, এখনো তাদের দেখা পাওয়া যায়নি। নাই কোনো পোস্টার ও ব্যানার। তারা নির্বাচনে শুধু কাগজে আছে, মাঠে নাই। তিনি বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ নিঃসন্দেহে একজন সজ্জন মানুষ। প্রার্থী যেই হোক না কেন, ইমরান আহমদের বিজয় সবসময়ই নিশ্চিত। এখানে শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও আমাদের প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি নেই। কোনো ধরনের প্রলোভনে পড়ে নয়, নিঃস্বার্থভাবে সাধারণ মানুষ এসে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ এর জন্য কাজ করছেন। পাঁচবারের এমপি ও বর্তমান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ এর শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। যেখানে নৌকার বিজয় অনেকটা নিশ্চিত, সেখানে এতো এতো গণসংযোগ কেন? এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামিলীগ এর ওই নেতা বলেন, ভোট নিয়ে আমরা মোটেও চিন্তিত নয়, আমরা চিন্তিত ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে, সেজন্যই আমরা গণসংযোগ করছি, ভোটারদের ভোটকেন্দ্র নিয়ে আসার জন্য। ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয় সে জন্যই আমাদের এই গণসংযোগ।
ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত প্রার্থী গোয়াইনঘাটের নাজিম উদ্দীন (কামরান) বলেন, আমার অর্থনৈতিক সচ্ছলতা না থাকায় আনুষ্ঠানিক প্রচারণা করতে পারছিনা, তবে সরব প্রচারণার চেয়ে নিরব প্রচারণায় ব্যাস্ত সময় পার করছি। নিরবে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি, আলহামদুলিল্লাহ ভালো সাড়া পাচ্ছি। তিনি বলেন, নিরব প্রচারণা ও একটা কৌশল।
কোম্পানীগঞ্জের বাসিন্দা তৃণমূল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবুল হোসেন বলেন, আমি আমার সক্ষমতার আলোকে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি, ভোটারদের কাছ থেকে উৎসাহ উদ্দীপনা পাচ্ছি। পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে ইনশাআল্লাহ ভালো রেজাল্ট হবে।