এম কে তুহিন ::
চলছে শীতের ভরা মৌসুম। সন্ধ্যা নেমে এলে কুয়াশার সাথে বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা। লেপ বা কম্বলের ওম নিয়ে শীতরাতে আরামের ঘুম হয় অনেকের। তবে এই শীতই এ শহরের বুকে রাত কাটানো ছিন্নমূল মানুষের কষ্ট ও দুর্ভোগ দুটোই বাড়িয়ে দেয়। শীত নগরীর ছিন্নমূল মানুষের কাছে আরও কয়েকগুণ বেশি হয়ে ধরা দেয়। শীত তাদের নিজেদের অসহায়ত্বকে যেনো চোখে আঙুল দিয়ে ধরিয়ে দেয়। শীত উপভোগ তো দূরের কথা প্রতিরোধ করার কোনো প্রস্তুতিও থাকে না তাদের। তাদের কাছে শীত হয়ে ওঠে কেবলই বিষাদের, কেবলই যাতনার। একেকটি রাত যেন তাদের কাছে দুঃস্বপ্ন। রাত যত গভীর হয় শীত যেন তত বাড়তে থাকে।
শীতের এমন এক রাতে মঙ্গলবার নগরীর চৌহাট্টায় গিয়ে দেখা যায় বস্তা গায়ে জড়িয়ে শুয়ে আছেন অনেকে। কেউ কেউ সহায়তার কম্বল পেয়েছেন কেউ কেউ কিছুই পাননি। শীতে তাদের কষ্টই বেশি। ফুটপাথে রাত কাটানো এক প্রতিবন্ধী বলেন, এই বছর কেউ এখনও কম্বল দেয়নি। খুব কষ্টে রাত কাটে। আমার মত অনেক অসহায় আছে কষ্টে দিন যাপন করছে একটি কম্বলের জন্য।
আরেক নারী বলেন, বস্তা গায়ে দিয়ে শুয়ে আছি। আমরা গরীব মানুষ। আমাদেরকে কেউ কিছু দেয়নি।
এই অসহায় শীতার্ত মানুষদের জন্য তাদের কোনো প্রকল্প নেই জানিয়ে সিলেট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রফিক বলেন, এই বছর আমারা বিতরণের জন্য ২০০ কম্বল কিনেছি। এর বাইরে কোনো বরাদ্দ নেই। আমাদেরকে যে পরিমাণ অর্থ দেওয়া হয় তার পরিমাণ খুব সামান্য। কম্বল বিতরণ ছাড়া আর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় তার বাইরে আর কিছু করা যায় না। যদি সরকার টাকা দেয় তাহলে আমরা আরো ভালো মানের কম্বল বিতরণ করব। অনেক সময় দেখা যার সরকার অল্প টাকা দিয়ে বেশি কম্বল বিতরণের কথা বলে তখন আসলে ভালো মানের কম্বল দেওয়া যায় না। আমরা চেষ্টা করি ভালো মানের কম্বল বিতরণ করতে।
শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে জানিয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকলকেই কম্বল দেওয়া হয়ে। কেউ যদি পেয়ে না থাকেন খুঁজে বের করে দেওয়া হবে। তিনি জানান, কম্বল ছাড়াও ইতিমধ্যে শীতবস্ত্র দেওয়া হয়েছে। আর এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
ছিন্নমূল লোকদের পুনর্বাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কেউ যদি এরকম তালিকা করে বা কারো কাছে তালিকা থাকে তাহলে এ ব্যাপারে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নেব।