রবিবার, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৫
Google search engine
Homeরাজনীতিসাবেক কাউন্সিলর লায়েক রাজধানী থেকে নারীসহ গ্রেপ্তার

সাবেক কাউন্সিলর লায়েক রাজধানী থেকে নারীসহ গ্রেপ্তার

সুমি বলছেন ‘স্ত্রী’ রুমি বলছেন ‘না’

মিঠু দাস জয়, আহমেদ সবুজ:

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ লায়েককে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার সাথে এক নারীও ছিলেন। সুবর্ণা খান সুমি (২৫) নামের ওই নারী পুলিশের কাছে নিজেকে লায়েকের স্ত্রী দাবি করেছেন। সুমি কাজলশাহ এলাকার ইউসুফ খানের মেয়ে। তবে লায়েকের স্ত্রী নাসিমা আক্তার রুমি এ দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। সাবেক কাউন্সিলর লায়েকেরবিরুদ্ধে সিলেটের বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি সিলেট মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং নগরীর মুন্সিপাড়া এলাকার ১৯১ নম্বর বাসার মৃত আব্দুর রশীদের ছেলে।
পুলিশসূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানাসহ বিভিন্ন থানায় সাবেক কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ লায়েকের বিরুদ্ধে ১৩ মামলা রয়েছে। ৫ আগস্টের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে লায়েককে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার সিলেটে নিয়ে আসার পর অসুস্থতা বোধ করলে তাকে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। চিকিৎসা শেষে বর্তমানে তাকে কোতোয়ালি থানায় রাখা হয়েছে। রবিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত ১৩ মামলার আসামি সাবেক কাউন্সিলর লায়েককে গ্রেপ্তার করেছি আমরা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আগামীকাল তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন কারণে একাধিকবার সমালোচিত হয়েছেন আবুল কালাম আজাদ লায়েক। ২০২০ সালের ১ এপ্রিল করোনাকালে রাতের আধারে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের খাদ্য ফান্ডের ১২৫ বস্তা চাল জোর করে নিজ বাসায় নিয়ে যান কাউন্সিলর লায়েক। বিষয়টি জানাজানি হলে সিসিক কর্তৃপক্ষ ৩ এপ্রিল লায়েকের বাসা থেকে চাল উদ্ধার করে। ২০২১ সালের ২৩ এপ্রিল লায়েকের বাসা ও কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই বছরের ৮ জুন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে স্থানীয় সাংবাদিক সোয়েব বাসিত জানান, মুন্সীপাড়ার মসজিদ ও ক্লাব কমিটি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে কাউন্সিলর লায়েক নিজেই তার বাসা ও অফিস ভাঙচুর করিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে ১৩ জুন পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন লায়েক। সেই সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলে দাবি করেন তিনি। ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর উত্তরাধীকার সনদ প্রদানের জন্য এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠে লায়েকের বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত অডিও ও ভিডিও ক্লিপ সে সময় ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এছাড়াও জনসাধারণ এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে চরম দুর্ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে কাউন্সিলর লায়েকের বিরুদ্ধে। ৩ নং ওয়ার্ডে তিনি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েঝে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন লায়েক। অবশেষে শুক্রবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি। তার গ্রেপ্তারের খবরে স্বস্তি ফিরে এসেছে মুন্সীপাড়ায়। এলাকার বাসিন্দারা উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন তার গ্রেপ্তারে।

প্রাসঙ্গিক সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

জনপ্রিয়

Recent Comments