আধুনিক রিপোর্ট
অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো সহজ করতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি নতুন চুক্তি করেছে যুক্তরাজ্য। চুক্তির আওতায় যাঁদের আশ্রয়ের অর্থাৎ অ্যাসাইলাম আবেদন খারিজ হয়েছে, যাঁরা বিদেশি অপরাধী ও যাঁদের ভিসার বৈধ মেয়াদ অতিবাহিত হয়ে গেছে, তাঁদের ‘ফাস্ট-ট্রাক’(দ্রুত) পদ্ধতিতে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। সে হিসেবে ১০ হাজার বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য।
চলতি সপ্তাহে লন্ডনে দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তিটি হয়। অবৈধ অভিবাসীদের বের করে দেওয়ার জন্য শক্ত প্রমাণ রয়েছে—এমন ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক সাক্ষাৎকার ছাড়াই তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াকে সহজতর করবে চুক্তিটি।
প্রায় ১১ হাজার বাংলাদেশি ছাত্র গত বছর ভ্রমণ কিংবা কাজের ভিসায় যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে তারা বসবাসের জন্য আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। দেশটিতে প্রাথমিক আশ্রয়ের জন্য তাদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশের আবেদন মঞ্জুর হয়। বাকি ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। আবেদন খারিজ হওয়া এসব আশ্রয়প্রার্থীদের এখন বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তির আওতায় এই বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
যুক্তরাজ্যের অবৈধ অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল টমলিনসন বলেছেন, অবৈধভাবে লোকজনের এখানে আসা ও থাকা ঠেকাতে তাঁদের পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ অপসারণ ত্বরান্বিত করা। যুক্তরাজ্যের একটি মূল্যবান অংশীদার বাংলাদেশ। এটা একটা চমৎকার ব্যাপার যে এই বিষয়সহ অন্যান্য ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁরা সম্পর্ক জোরদার করছেন।
চলতি সপ্তাহে লন্ডনে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্রবিষয়ক যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ প্রথম যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে চুক্তির ব্যাপারে দুই দেশ সম্মত হয়। ওয়ার্কিং গ্রুপে উভয় দেশ অংশীদারত্ব জোরদারে অঙ্গীকার করে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিষয়ে সহযোগিতা জোরালো করতে প্রতিশ্রুতি দেয়।
ওয়ার্কিং গ্রুপ বিদ্যমান ভিসা রুটগুলোর মাধ্যমে বৈধ অভিবাসনের সুবিধা অব্যাহত রাখা, অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলা, তথ্য ভাগাভাগি জোরদার করা, গুরুতর সংগঠিত অপরাধ মোকাবিলায় নিজ নিজ পন্থা সম্পর্কে পরস্পরের সঙ্গে বোঝাপড়া বাড়ানোর ব্যাপারেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়।
ভিসা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অন্য দেশের মানুষকে যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি দেয়। কিন্তু যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর কেউ আশ্রয়ের আবেদন করলে সেখানে তার অবস্থান অনির্দিষ্ট হয়ে যায়। ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত রেকর্ড ২১ হাজার ৫২৫ জন ভিসাধারী যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের আবেদন করেন যা আগের বছরের তুলনায় ১৫৪ শতাংশ বেশি।
ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর আশ্রয় প্রার্থীর শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তান, এরপরের অবস্থানে আছে বাংলাদেশ, ভারত, নাইজেরিয়া ও আফগানিস্তান। গত বছর যুক্তরাজ্য থেকে বিভিন্ন দেশের ২৬ হাজার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।