সোমবার, নভেম্বর ৪, ২০২৪
Google search engine
Homeশীর্ষ সংবাদ‘বয়স তো শেষ হয়ে গেছে, দাবি আর আদায় হচ্ছে না’

‘বয়স তো শেষ হয়ে গেছে, দাবি আর আদায় হচ্ছে না’

এম কে তুহিন

১ মে প্রতি বছরই পালিত হয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে এ দিবসটি পালিত হয়ে থাকে । বিশ্বের অনেক দেশেই ‘মে ডে পরিচিত প্রাটীন এক বসন্তের উৎসব হিসেবে । কিন্তু বর্তমানে এটা বেশি পরিচিত শ্রম দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে। বিশ্বজুড়ে শ্রমিকদের এঁতিহাসিক সংগ্রাম ও অর্জনের কথা মনে করিয়ে দিতেই দিনটি পালিত হয়ে থাকে ।


এবার বাংলাদেশে মে দিবস পালিত হচ্ছে এমন এক সময়ে যখন দেশজুড়ে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। তাপপ্রবাহ হোক কিংবা শৈত্যপ্রবাহ-শ্রমিকদের জীবন চলে একইভাবে । রাত পোহালেই কাজে নামতে হয়। যেমন করে চলমান তাপপ্রবাহেও থেমে নেই চা-শ্রমিকদের জীবনযাত্রা । প্রচণ্ড গরমে প্রাণ হাঁসফাঁস তবুও বিশ্রামের
সুযোগ নেই । তাও যদি মজুরি মিলত প্রত্যাশামত তবে নাহয় কষ্ট মেনে নিতেন তারা । বছর বছর প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই জুটে না তাদের ভাগ্যে। কাজের পরিবেশ আরও ভালো করা এবং ট্রেড ইউনিয়নকে আরও শক্তিশালী করা ও তাদের মজুরি ৩০০ টাকার দাবি জানিয়ে আসছেন অনেক দিন ধরে । এখন পাচ্ছেন ১৭০ টাকা করে, তাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে ।
চা শ্রমিক রাজু কলোয়ার বলেন, বছরের পর বছর চলে যায় আমাদের দিকে কেউ লক্ষ্য করে না। সরকারের কাছে দাবি জানালেও সরকার শোনে না। আমরা যে অভাব অনটনের মধ্যে আছি সেটা শুধু আমরা জানি । না ভিটামাটি আছে, না কিছু আছে শুধু জীবনটা নষ্ট করতেছি।
আশি বছর বয়সী চা-শ্রমিক বিরেশ বাউরি বলেন, দাবি জানিয়ে আন্দোলন করে বয়স তো শেষ হয়ে গেছে, দাবি আর আদায় হচ্ছে না । আমাদের তো দাবি দাওয়া কেউ শোনে না। আমাদের প্রধান দাবি হলো আমাদের মজুরি ৩০০ টাকা করা হোক । আমাদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য কোনো টাকা পাই না। আমরা কি চুরি করে, ডাকাতি করে টাকা যোগাড় করবো ।
চা-শ্রমিক রিদেশ নায়েক বলেন, আমরা কাজ করে যে মজুরি পাই তা দিয়ে আমাদের পোষায় না। জিনিসপত্রের দাম বেশি । আমাদের জীবন চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমরা ৩০০ টাকা মজুরি চাই।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, চা-শ্রমিকদের বর্তমান অবস্থা খুবই কঠিন। বিভিন্ন চা-বাগানে শ্রমিকদের মজুরি হচ্ছে না। অনেকগুলো চা-বাগান বন্ধের পথে । মহান মে দিবসে আমরা চাই ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যে দাবি উত্থাপন করেছিলাম সেগুলো আবার পুরণের দাবি জানাই । আমাদের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন করা হোক । চা-বাগানগুলাতে শ্রমিকদের বেতন ভাতা নিয়ে যে লোকচুরি হচ্ছে সেটা বন্ধ হোক । ১৯৫৭ সালে বঙ্গবন্ধু ছিলেন চা বোর্ডের প্রথম চেয়ারম্যান । আমি চাই আমাদের ভূমির অধিকার বাস্তবায়ন হোক ।

তিনি বলেন, এ দেশে আমরা গত ২০০ বছর ধরে বসবাস করছি কিন্তু আমাদের ভূমির অধিকার পাচ না। এই মে দিবসে আমাদের চাওয়া শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি বাস্তবায়ন করা হোক । শ্রমিক ও শিল্প দুটোই বেচে থাকুক । বেতন ভাতা নিয়ে যে লোকচুরি সেটা বন্ধ হোক। আমরা যাতে ডালভাত খেয়ে বেচে থাকতে পারি এটাই আমাদের মে দিবসের প্রত্যাশা ।

প্রাসঙ্গিক সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

জনপ্রিয়

Recent Comments