সবুজ আহমদ:
প্রায় ৪ মাস বন্ধ থাকার পর চালু হলো শত বছরের কিনব্রীজ। তবে আগের সেই ব্যস্ততা থাকবেনা এই ব্রীজে, পায়ে হেঁটেই হতে হবে পারাপার, কিনব্রীজকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যান বাহনের চাপ আর সইতে পারবেনা প্রায় শতবর্ষী এই ব্রীজটি।
চায়ের পর সর্বমহলে সিলেটকে উপস্থাপন করে যে স্থাপনা সেটি হল প্রায় শতবর্ষী সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিনব্রিজ। চলতি বছরের আগস্ট মাসে শুরু হয় এই ব্রিজের সংস্কার কাজ।
এই সংস্কার করতে গিয়ে সংশ্লিষ্টরা বুঝতে পারেন যে এই সেতুটিকে আর যান চলাচলের উপযোগী না। তাই জন নিরাপত্তার স্বার্থে ও ঐতিহ্যবাহী এই কিনব্রিজকে টিকিয়ে রাখতে যান চলাচল বন্ধ রেখে শুধুমাত্র পায়ে হাঁটার জন্য উন্মুক্ত হবে বলে জানান সিলেট সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন।
যদি এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারে সওজ তাহলে কিনব্রিজ হবে দেশের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ পদচারী–সেতু। সেপ্টেম্বর মাসে একই কারণে সিলেট সিটি করপোরেশন ও সড়ক ও জনপথ বিভাগ মিলে সংস্কার করে কিনব্রিজকে পদচারী-সেতুতে রূপান্তর করতে চায়।
কিন্তু ব্রিজের দক্ষিণ পাড়ের মানুষের দাবীর মুখে প্রায় ৫২ দিন পর আবারও যান চলাচলের জন্য খোলে দেওয়া হয় কীনব্রিজটি।
২০২১ সালে ব্রিজটি আবার যান চলাচলের ঝুঁকির মুখে পড়ে। এজন্য সেবছর জুলাই মাসে ভারী যান চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ব্রিজের প্রবেশ মুখে সাইনবোর্ড ঝুলানো হয়ে। রিকশা-ভ্যান-মোটরসাইকেল ছাড়া বাকি সব ধরনের যান চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা যায়, ঝুকিপূর্ণ এই ব্রিজ টি সংস্কারের বিষয়ে ২০২০ সালে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হয়।
সেখানে সেতু সংস্কারের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিন সদস্যের একটি কমিটি করে বিভাগীয় কমিশনার। পরবর্তীতে সওজের পক্ষ থেকে সেতুটি সংস্কারে মন্ত্রণালয়ের কাছে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে আবেদন ও করা হয়।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পায় সওজ সিলেট অফিস। ওই বছরেরই জুনে বরাদ্দের টাকা রেলওয়ের সেতু বিভাগকে বুঝিয়ে দেয় সওজ সিলেট বিভাগ । তবে নানা জটিলতা কাটিয়ে বরাদ্দকৃত টাকা দুই বছরের অধিক সময় পর চলতি বছরের ১৭ আগস্ট থেকে এই সেতুর সংস্কার কাজ শুরু করে রেল বিভাগ।
সিলেট সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, এই ব্রিজটি শুধু পায়ে হেঁটে চলার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
কারণ এই ব্রিজটির সংস্কার করতে গিয়ে দেখা গেছে এটি আর যান চলাচলের উপযোগী নয়। এই ব্রিজ দিয়ে এখন যান চলাচল করলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
তাই ঐতিহ্যবাহী এই ব্রিজকে টিকিয়ে রাখতে এবং জননিরাপত্তার স্বার্থে এই ব্রিজে যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে।
তিনি আরও বলেন, এর আগেও ব্রিজকে টিকিয়ে রাখতে ও নিরাপত্তার স্বার্থে যান চলাচল বন্ধ রাখা হলেও নানা কারণে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা যায়নি।
তবে এখন সবাইকে বুঝতে হবে। ব্রিজটি যান চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এখন যদি এই ব্রিজে কোনো দুর্ঘটনা হয় তখন এর দায়ভার আমাদেরকে নিতে হবে।
তাই ব্রিজটি শুধুমাত্র পায়ে হাঁটার জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এখন যদি জনগণের প্রয়োজন বেশি হয় তাহলে এই ব্রিজের পাশে আরেকটি ব্রিজের তৈরির প্রস্তাব করা যেতে পারে। কিন্তু কোনো ভাবেই জনসাধারণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা যাবে না।