স্পোর্টস ডেস্ক
সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিনে মুখোমুখি লড়াই করে শেষ করলো বাংরাদেশ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দারুন লড়াই করে দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে এসে দিন নিজেদের করলো বাংলাদেশ
দ্বিতীয় দিনশেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৬৬ রান করেছে কিউইরা। উইলিয়ামসনের ক্যাচ মিস করলেন তাইজুল ইসলাম, তিনি তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। অবশ্য তাকে আবার পরে প্যাবেলিয়ানে ফেরান তাইজুল। দিনের প্রায় প্রায় প্রতিটি সেশনেই থাকলো সমতা, শেষ সেশনটি বাংলাদেশ করে নিলো নিজেদের। দিনশেষে এগিয়েও আছে বাংলাদেশই। পথচলায় কখনো সঙ্গী হলো উত্থান-পতন, কখনও হতাশা।
দিন শেষে কাইল জেমিসন ২৪ বলে ৭ রানে ও টিম সাউদি ০৪ বলে ১ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ৩১০ রানে। ৯ উইকেটে ৩১০ রান নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশ প্রথম বলেই হয় অলআউট। পরে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বোলিংয়ের শুরুটা করেন শরিফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। এক পেসার নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশ এই জুটিতে উইকেট পায়নি। বোলিং বদলাতেই বদলে যায় ভাগ্যও।
প্রথম উইকেটটা পান তাইজুল ইসলাম। ১৩তম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথমে একটি এলবিডব্লিউয়ের জোরালো আবেদন করেন তিনি। ওই ওভারেই তাকে সুইপ করতে গেলে ব্যাটের আগায় লেগে ক্যাচ যায় ফাইন লেগে দাঁড়ানো নাঈম হাসানের হাতে। ৪৪ বলে ২১ রান করেন তিনি।
তারপর দ্বিতীয় উইকেটটিও বাংলাদেশের জন্য আসে দ্রুতই। শরিফুলকে সরালেও আরেক প্রান্তে চালিয়ে যাওয়া মিরাজ এবার উইকেট নেন। ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়ে সিলি পয়েন্টে শাহাদাৎ হোসেন দীপুর দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে ৪০ বলে ১২ রান করে সাজঘরে ফেরেন ডেভন কনওয়ে।
এরপর জুটি বাধেন কেইন উইলিয়ামসন ও হেনরি নিকোলস। ৪২ বলে ১৯ রান করা নিকোলস উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ দেন। এরপর উইলিয়ামসনের সঙ্গী হন ড্যারল মিচেল। দুজন মিলে গড়েন ৬৬ রানের জুটি। সেটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম।
এরপর এগিয়ে এসে তাকে মিচেল খেলতে যান, বল টার্ন করে বেরিয়ে যায়। বল পেয়ে স্টাম্প ভাঙতে ভুল করেননি সোহান। মিচেল অবশ্য ফিরতে পারতেন আগেই, কিন্তু তখন রিভিউ নেয়নি বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় সেশনটা পুরোপুরি বাংলাদেশের হতে পারতো, কিন্তু হয়নি তাইজুলের জন্য। নাঈম হাসানের বলে মিড অফে দাঁড়িয়ে উইলিয়ামসনের লোপ্পা ক্যাচ ছাড়েন তিনি। এ নিয়ে লম্বা সময় ধরেই ভুগতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
জীবন পাওয়ার পর টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৯তম সেঞ্চুরিটা পেয়ে যান উইলিয়ামসন। মিচেলের পরে তিনি থাকতেই অভশ্য তার দুই সঙ্গীকে ফেরাতে পেরেছে বাংলাদেশ। টম ব্লান্ডেল একইরকম ক্যাচ দেন যেমনভাবে আউট হয়েছিলেন নুরুল হাসান সোহান, উইকেট নেন নাঈম হাসান। লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল ব্যাট ছুয়ে যায় সোহানের কাছে।
এরপর উইলিয়ামসন আরও একটি জুটি গড়েন টম ব্লান্ডেলের সঙ্গে। তাদের এই জুটি ভাঙেন মুমিনুল হক। দিনে বেশ কয়েকবার বোলিং বদলে সফল হন টেস্ট অধিনায়কত্বের অভিষেক হওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত। মুমিনুল ইসলামকে নিয়ে এসেও পান সেটি।
তার কিছুটা টার্ন করা বলে স্লিপে দাঁড়ানো শান্তর হাতে ক্যাচ দেন ফিলিপস। ৬২ বলে ৪২ রান করেন তিনি। এর মধ্যে উইলিয়ামসন তুলে নেন সেঞ্চুরি। ডন ব্র্যাডম্যান, শচীন টেন্ডুলকার ও বিরাট কোহলির পর সবচেয়ে কম ইনিংসে ২৯তম টেস্ট সেঞ্চুরি পান তিনি।
দিনটা বাংলাদেশ নিজেদের করে নেয় উইলিয়ামসনকে ফিরিয়েই। ক্যাচ ফেলা দেওয়া শাপমোচনে হয় সেটি। ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে উইলিয়ামসনকে বোল্ড করেন তিনি। ১১ চারের ইনিংসে ২০৫ বলে ১০৪ রান করেন তিনি।
দিনের প্রথম দুই সেশনে সমান তালে পাল্লা দেওয়া বাংলাদেশ শেষ সেশনে এসে দিন নিজেদের করে নেয়। এই সময়ে মোট চারটি উইকেট নেয় স্বাগতিকরা।