শুক্রবার, অক্টোবর ১১, ২০২৪
Google search engine
Homeশিক্ষাশাবির ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপকের ফলাফল জালিয়াতি, পরীক্ষা না দিয়েই পাশ শিক্ষার্থী

শাবির ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপকের ফলাফল জালিয়াতি, পরীক্ষা না দিয়েই পাশ শিক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে পরীক্ষায় অনুপস্থিত শিক্ষার্থীকে পাশ করিয়ে দেবার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মো. সিকান্দার আলীর বিরুদ্ধে এমন অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের চতুর্থ বর্ষ ১ম সেমিস্টার পরীক্ষায় অনুপস্থিত এক শিক্ষার্থীকে পাশ করিয়ে দেবার গুরুতর এ অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও ওই একই কোর্সের একাধিক শিক্ষার্থীর রেজাল্ট কোর্স টিচার প্রদত্ত নম্বর পরিবর্তন করে প্রকাশ করারও প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ওই শিক্ষাবর্ষের একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ পছন্দের শিক্ষার্থীদের নাম্বার পরিবর্তন এমনকি পরীক্ষা না দিলেও তাকে পাশ করিয়ে দেবার ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালের এক কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষায় তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানা যায়। এরপর শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি সামনে আসে।

এ সংক্রান্ত একাধিক নথিপত্র প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। যেখানে দেখা যায় ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী যার রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ২০১৩২৩৬০৩৫, তাকে ENG-415, সাউথ এশিয়ান লিটারেচার ইন ইংলিশ কোর্সে পরীক্ষা না দিয়েই পাশ করিয়ে দেবার ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি। এছাড়াও একাধিক শিক্ষার্থীকে নাম্বার পরিবর্তন করে রেজাল্ট প্রকাশ করেছেন তিনি বলেও প্রমাণ পাওয়া যায়।

জানা যায়, ওই সেমিস্টারের পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। নিয়ম অনুযায়ী সেমিস্টারের সংশ্লিষ্ট কোর্সের দুই শিক্ষক প্রদত্ত নাম্বার পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যানের হাতে গেলে তিনি তা যোগ করে প্রকাশ করেন। ওই কোর্সে তিনি একাধিক শিক্ষার্থীকে ওই কোর্স টিচারদ্বয়ের নাম্বার পরিবর্তন করে রেজাল্ট পরিবর্তন করে প্রকাশ করেছেন এবং পরীক্ষা না দেওয়া শিক্ষার্থীকেও পাশ করিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

নথি ঘেটে দেখা যায়, ওই রেজিস্ট্রেশনধারী ফাইনাল পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকা স্বত্ত্বেও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে প্রকাশিত ফলাফলে তিনি পাশ করে গেছেন। এছাড়াও একাধিক শিক্ষার্থীকে মনগড়া এবং ভৌতিক অতিরিক্ত নাম্বার দিয়ে তা প্রকাশ করেছেন তিনি। ওই সেমিস্টারের ওই পরীক্ষা কমিটির ট্যাবুলেটর (নিরিক্ষক) হিসেবে ছিলেন বিভাগের বিভাগের অধ্যাপক শরিফা ইয়াসমিন এবং সহযোগী অধ্যাপক ড. আফরোজা খানম বলে জানা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগের ওই শিক্ষাবর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ জানিয়ে বলেন, আমরা এ ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। বিভাগের শিক্ষকদের দ্বারা এমন ঘটনা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।

পরীক্ষা না দিয়েও পাশ করে যাওয়া ওই রেজিস্ট্রেশনধারী শিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষায় না বসলেও ভুলবশত আমার রেজাল্ট চলে আসে। সেখানে কম নাম্বার আসায় তা আমার ওভারঅল ফলাফল কমিয়ে দেয়। এরপর আমি পরবর্তী সেমিস্টারে আবারো ওই কোর্সে রেজিস্ট্রেশন করি এবং সে কোর্সের পরীক্ষা দিয়েছি।

এ ঘটনার বিষয়ে বিভাগটির প্রধান অধ্যাপক হোসেন আল মামুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাবার পর তথ্য যাচাই করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবগত করবো এবং তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক মো. সিকান্দার আলী বলেন, ফলাফল নিয়ে এমন ঘটনা ঘটার কথা নয়। তারপরও যেহেতু অভিযোগ এসেছে সুতরাং কমিটির সবাই বসে বিষয়টি খতিয়ে দেখে তারপর এ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রাসঙ্গিক সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

জনপ্রিয়

Recent Comments